কর্মঠ হাত থেমে নেই কখনোই। ঘরে-বাইরে সমান তালে কাজ করে চলেছেন আপনি। কখনো কি–বোর্ড, কখনো ফাইল; আবার কখনো রান্নাঘরে কাটাকুটি বা মসলা নেড়েচেড়ে খাবার প্রস্তুত করায়। অন্যদিকে কখনো ধুলা-কাদা পেরিয়ে ছোটাছুটি; বা এ ঘর থেকে ও ঘর, ব্যস্ত পা জোড়া ছুটছেই। হাত বা পায়ের ফাটা, অমসৃণ ত্বক হতে পারে আপনার অস্বস্তির কারণ। এ জীবনের মাঝেও তাই হাত ও পায়ের সুস্থতার জন্য আলাদা একটু সময় রাখা প্রয়োজন। নিয়মিত অল্প সময় দিলেও হাত-পা সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।

বনানীর আয়ুর্বেদ রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (চিফ অপারেটিং অফিসার) ও আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ শালিন ভারতী জানালেন, শুধু হাত-পায়ের বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্যই যে যত্নের প্রয়োজন, বিষয়টি এমন নয়। আয়ুর্বেদ মতে, হাত–পায়ের নির্দিষ্ট স্থানে মালিশ করার ফলে ক্লান্তি আর মানসিক চাপও কমে আসে।

ঘুমের আগে একটু সময়

ঘুমের আগে ১০-১৫ মিনিট কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন। সারা দিনের ক্লান্তি অনেকটাই দূর হবে। এ ছাড়া পানিতে লেবু আর গ্লিসারিন মিশিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এতে হাতের ত্বক পরিষ্কার ও কোমল থাকবে। হাত-পায়ের ত্বক ফাটা থাকলে ফাটা স্থানটুকু এই মিশ্রণে ভিজিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। এরপর তেল লাগিয়ে ঘুমিয়ে যান। সকালে গোসলের সময় তেল পরিষ্কার করে ফেলুন।

দুর্গন্ধ ও দাগ হলে

মাছ-মাংস ধোয়ার পর হাতে কাঁচা মাছ-মাংসের গন্ধ রয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে পানিতে লেবু ও লবণ মিশিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ হাত ভিজিয়ে রাখুন। হলুদ বা অন্যান্য মসলার কারণে হাতে দাগ পড়তে পারে। মধুর সঙ্গে লেবু মিশিয়ে দাগের স্থান পরিষ্কার করা যায়।

পরিচ্ছন্ন থাকতে

বেসন, তেল, অল্প পরিমাণ চালের গুঁড়া ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে হাত ও পায়ের ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন। মাসে এক-দুই বার এভাবে স্ক্রাবিং করলে ত্বক পরিষ্কার ও কোমল থাকবে, ত্বকে বলিরেখা কম পড়বে। গোড়ালি পরিষ্কার করার জন্য প্রতিদিন ঝামা পাথর বা মাটির তৈরি পরিষ্কারকের সাহায্য নিতে পারেন। এ ছাড়া ত্বক শুষ্ক প্রকৃতির হলে দুধ দিয়ে হাত-পা ধোয়া যায়।

নখের যত্নে

নখ অতিরিক্ত বড় রাখা উচিত নয়। বড় নখের ভেতর ময়লা আটকে থাকতে পারে, আবার বড় নখ ভেঙে গিয়ে হঠাৎ আঘাতও লাগতে পারে। ১০-১২ দিন অন্তর ব্রাশের সাহায্যে নখ পরিষ্কার করতে পারেন। তবে কাজ করতে করতে নখের ভেতরটা ময়লা হয়ে এলে ১০ দিন পার হওয়ার আগেই আবার ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।

খেয়াল রাখুন

ওয়াশিং পাউডার সরাসরি হাতে নেবেন না। হাত শুকনা বা ভেজা যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, কখনোই ওয়াশিং পাউডার বা গুঁড়া সাবান সরাসরি হাতে নেওয়া উচিত নয়। কাজ করতে গিয়ে হাতে ওয়াশিং পাউডার লেগে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। উচ্চমাত্রার ক্ষারীয় সাবান বা অন্য যেকোনো উচ্চমাত্রার রাসায়নিকসমৃদ্ধ বস্তু নিয়ে কাজ করতে হলে গ্লাভস ব্যবহার করুন।

বাইরে বেরোলে ফুলহাতা পোশাক পরুন। পা ভালোভাবে ঢেকে থাকে, এমন জুতা বেছে নিন।

রাসায়নিক উপাদানসমৃদ্ধ লোশন, ক্রিম বা অন্যান্য সামগ্রী খুব বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন।

৭-১০ দিন অন্তর ম্যানিকিউর ও পেডিকিউর করানো প্রয়োজন; ঠিক কত দিন পরপর করানো আপনার জন্য ভালো, তা নির্ভর করে আপনার কাজের ধরনের ওপর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here