বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনগুলোর ওপরের দিকে একটি ছোট জায়গা থাকে, যেটি নচ নামেই পরিচিত। সেখানে থাকে ক্যামেরা, সেন্সর ও স্পিকার। নচ একটু ব্যয়সাপেক্ষ, তারপরও কম দামের নতুন আইফোনে এই নচ বসানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এসই২ সিরিজের ফোনটি কবে আসবে তা জানানো হবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ডেভেলপার্স সম্মেলনে।

২০১৬ সালে বাজারে আসা আইফোন এসইর কথা হয়তো আপনার মনে নাও থাকতে পারে, কিন্তু বাজারে কিন্তু ঠিকই বিকোচ্ছে এই মডেলের ফোনসেট, কারণ বড় আকারের ফোন অনেকেরই পছন্দ নয়।

এরও আগে শোনা গিয়েছিল, ২০১২ সালে বাজারে আসা আইফোন ৫-এর সমান বা তার চেয়েও ছোট আকারের আইফোন এসই২ বাজারে আসবে। তবে সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তনটা আসতে পারে, তা হলো এসই২-এর পেছনের দিকটা হতে পারে কাচের তৈরি, এতে ফোনকে তারহীনভাবে চার্জ দেওয়া যাবে। এতে এসই২ চলে আসবে আইফোন ৮, আইফোন ৮প্লাস বা আইফোন ১০-এর মতো ফোনগুলোর কাতারে। এই ফোনগুলোও কিউআই ভিত্তিক তারহীন চার্জার ব্যবহার করে চার্জ দেওয়ার উপযোগী ।

আরো শোনা যাচ্ছে এসই২ তে নাকি হেডফোনের জন্য কোনো পোর্ট রাখা হবে না। এমনটা হলে আইফোন ৬-ই হবে একমাত্র আইফোন যাতে হেডফোনের জন্য পোর্ট থাকবে।

অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মোবাইলফান ‘আইফোন এসই ২০১৮’ নামে একটি গ্লাস প্রোটেকটর বাজারজাত শুরু করেছে। ওখানে কাটা অংশ রয়েছে। এতে অনেকেই ধারণা করছেন এসই২ ফোনটিতে নচ থাকছে। অলিকজার নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই প্রটেক্টরটির উৎপাদন করছে, মোবাইলের কেস ও অ্যাকসেসরিজ তৈরির জন্য যাদের বেশ নামডাক রয়েছে।

২০১৪ সালে আইফোনের কেস তৈরিকারী কিছু প্রতিষ্ঠান ‘টিয়ারড্রপ শেপড’ আইফোনের জন্য কেস তৈরি করেছিল, যার পরিণাম কী হয়েছিল, নিশ্চয়ই জানা আছে সবার। আইফোন আর ওই আকৃতির ফোন বাজারে ছাড়েনি। আবার ২০১১ সালে বাজারে আসা আইফোন ৪এসের ডিজাইনের সঙ্গে এর পূর্ববর্তী আইফোন ৪-এর আকারগত কোনো পার্থক্যই ছিল না। সেবারও অনেকে ধোকা খেয়েছিলেন নতুন ফোনের আকার নিয়ে।

ম্যাকরিউমার্স তো অলিকজারের চেয়ে আরো একধাপ এগিয়ে। তাদের ভাষ্য, চীনের একটি বিস্বস্ত সূত্র এই নচসহ আকৃতির সত্যতা নিশ্চিত করেছে। আর ৪ইঞ্চি পর্দার আইফোন এসই-এর তুলনায় এসই২-এর আকার কিছুটা বড়ই হবে।

ম্যাশেবলের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আইফোন এসই২ তে নচ থাকবে কি না, তা নিয়ে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। আইফোন ১০ বাজারে আসার পর থেকে নচ নিয়ে আমি প্রচুর লেখালেখি করেছি। তাই আমার বিশ্বাস হয় না এসই২ তে সেটা থাকবে। এই কাটা অংশ শুধু অলংকরণের জন্যই রাখা হয় না, এই জায়গায় বসানো হয় ট্রু ডেপথ ক্যামেরা। আর আমি মনে করি না যে, অ্যাপেল আগামি ১ বছরের মাঝে এসই-বান্ধব করার জন্য এর কোনো পরিবর্তন আনবে।’

বিশেষজ্ঞ আরো যোগ করেন, ‘দ্বিতীয়ত অ্যান্ড্রয়েড ফোন কোম্পানিগুলো যে ধরনের নচ ও নিচের চিন বেজেল ওয়ালা পর্দা তৈরি করে, অ্যাপল কখনোই সে ধরনের পর্দা তৈরি করবে না। যেমন আইফোন ১০-এর পর্দার ওপরের অংশ এর পেছনে কিছুটা ভাজ করা। জানা আছে কি, আইফোন ১০-এর এই পর্দা আর এই ভাজ করার প্রযুক্তিই এর দাম এতো বেশি হওয়ার প্রধান কারণ? আইফোন এসই অ্যাপলের সবচেয়ে কমদামি ফোন। সেখানে খাজাকাটা অংশের ট্রুডেপথ সিস্টেম আর নমনিয় পর্দা এর দাম বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। যদি তাই হয়, তাহলে বড় আকারের আইফোনের বিকল্প হিসেবে আইফোন এসই-এর জন্য বাজারে টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে দাড়াবে।’

ম্যাশেবলের বিশেষজ্ঞ আরো উল্লেখ করেন, ‘এ বছরের কমদামি আইফোন ৯-এ নচ থাকবে আর ব্যবহার করা হবে কমদামি এলসিডি পর্দা যেখানে আইফোন ১০ এ ব্যবহার করা হয়েছে দামি ওএলইডি পর্দা। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না, অ্যাপল আসলে কী করতে যাচ্ছে। হতেই পারে আমার দাবি ভিত্তিহীন, কিন্তু আমি আইফোন নিয়ে অনেক বছর ধরেই পড়াশোনা করছি আর আমার কাছে মনে হয় এসই২-তে নচ থাকা নিয়ে যে গুজব রটেছে, তা একেবারেই বানোয়াট। আমার সন্দেহ নেই যে একসময় সব আইফোনেই নচ ব্যবহার করা হবে, তবে অন্তত এসই সিরিজে নয়।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here