Saturday, February 8, 2025
Homeজীবনযাপনঈদবাজার পোশাকে যুগলবন্দী

ঈদবাজার পোশাকে যুগলবন্দী

রাজধানীর ওয়ারী থেকে সাবরিনা-হোসেন দম্পতি এসেছেন বেইলি রোডের একটি ফ্যাশন হাউসের বিক্রয়কেন্দ্রে। কিনেছেন এক জোড়া যুগল পোশাক। পেশায় চিকিৎসক সাবরিনা জান্নাতের ভাষ্য, বিয়ের পর এবার তাঁদের প্রথম ঈদ। ঈদের দিন ঘুরতে বেরোলে দুজন একসঙ্গেই যাবেন। সে ক্ষেত্রে দুজনের পোশাকে মিল থাকলে উৎসবের ভাবটা জমে ভালো। আর ছবিও আসে ভালো।

একটা সময় যুগল পোশাক হতো দুই বোন বা দুই ভাইয়ের। অথবা যমজ বা পিঠাপিঠি ভাইবোন একই রকম পোশাক পরত, যেন দুজনের পোশাকি মিলটাও থাকে। এর ধারাবাহিকতায় এসেছে ‘যুগল পোশাক’। আগে দম্পতিরা বাজার ঘুরে ঘুরে নিজেরা মিলিয়ে পোশাক কিনত, কিংবা দরজির কাছে বানিয়ে নিত। এখন ডিজাইনাররা এ কাজ সহজ করে দিয়েছেন। এবারের ঈদ উৎসবে এ ধরনের পোশাক ভালো গুরুত্ব পেয়েছে বলে মন্তব্য বিক্রেতাদের।

বিশেষ দিনের পোশাকে মন ও মতের একাত্মতা প্রকাশ করতে চান যুগলেরা। বেছে নিতে চান একই রং ও নকশার যুগলবন্দী পোশাক। আবার কখনো পরিবারের ছোট্ট ছেলেটি বায়না ধরে, বাবার মতো পাঞ্জাবি পরবে সে। মেয়েটা হয়তো আবদার করল, তার জামাটি হবে মায়ের শাড়ির মতো।

নগরবাসীর এমন বাসনা পূরণ করতেই এসেছে যুগল পোশাকের চল। গত কয়েক দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ছোট–বড় ফ্যাশন হাউসের বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে যুগল জীবনের বিচিত্র পোশাকের সম্ভার চোখে পড়ল। রঙ-বিশ্বরঙ, প্রবর্তনা, ফড়িং, অন্যমেলা, নিপুণ, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জন’স, রঙ বাংলাদেশ, বাংলার মেলা, সাদাকালো, বিবিআনা, দেশাল, নগরদোলা, সৃষ্টি, নিপুণ, এড্রয়েটসহ বিভিন্ন দোকানে দেখা গেছে যুগল পোশাকের উপস্থাপনা। আজিজ সুপার মার্কেটের কিছু দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে এমন পোশাক। দাম ২ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকার মধ্যে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যুগল পোশাক নিয়ে এবার ক্রেতার আগ্রহও বেশ। ফ্যাশন হাউসগুলোতে ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া-শাড়ি, পাঞ্জাবি-শাড়ি, পাঞ্জাবি-সালোয়ার-কামিজ এসেছে। একই নকশার পাঞ্জাবি বা ফতুয়ার রয়েছে ছোট-বড় সব সাইজ। সালোয়ার-কামিজ কিংবা শাড়ির বেলাতেও রাখা হয়েছে এই সুযোগ।

‘তুমি আর আমি এক চিমটি’ স্লোগান নিয়ে ২০০৪ সালে বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোটদের পোশাকের প্রচলন করে ফ্যাশন হাউস সাদাকালো। সে সময় বেশ সাড়া ফেলেছিল প্রতিষ্ঠানটি। সাদাকালোর চেয়ারম্যান তাহসীনা শাহীনের তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় ফ্যাশন হাউসের মধ্যে তাঁরাই প্রথম এ ধরনের ম্যাচিং পোশাকের চল এনেছিলেন। পরের বছর ২০০৫ সালে স্বামী-স্ত্রীর যুগল পোশাকের মডেল হয়েছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের ও সারা যাকের। সাদাকালোতে এক জোড়া পোশাক তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজারের মধ্যে কেনা যায় বলে জানালেন তাহসীনা।

১০টি দেশীয় ফ্যাশন হাউসের প্ল্যাটফর্ম দেশী দশ-এর সমন্বয়কারী ও সৃষ্টির উদ্যোক্তা ইয়ামিন পারভেজ বলেন, এখন কমবেশি সব প্রতিষ্ঠানই যুগল পোশাক বিক্রি করে। সারা বছর বিক্রি হলেও উৎসবগুলোতে এর চাহিদা ব্যাপক। প্রথম দিকে এসব পোশাকে তরুণদের আগ্রহ বেশি থাকলেও এখন সব বয়সীর আগ্রহ দেখা যায় যুগল পোশাকে।

বাজার ঘুরে যেসব যুগল বা ম্যাচিং পোশাক দেখা গেছে, তার সব কটির মোটিফ ও রং এক। বিন্যাসটা অন্যভাবে করা। বাবার সঙ্গে এক বছরের শিশুর পাঞ্জাবিটিও হুবহু পাওয়া যাচ্ছে। শাড়ি থেকে একটি নকশা তুলে পাঞ্জাবিতে নেওয়া কিংবা ফতুয়ার একটি নকশা সালোয়ার-কামিজে জুড়ে দেওয়া হয়েছে কোনোটিতে। তুলনামূলক তরুণদের জন্য রয়েছে ভিন্ন কাটিংয়ের ফিউশনধর্মী পোশাক। আবার পরিবারের সবার কথা চিন্তা করে একই রং ও নকশার পোশাক দেখা গেছে বেশ কিছু ফ্যাশন হাউসে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments